মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় যা খাবেন

মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় যা খাবেন

মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর খাবার অনেক ভূমিকা রাখে। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম, পরিশ্রম, সামাজিক সম্পর্ক যেমন জরুরি, তেমনই পুষ্টিকর খাবারও জরুরি। 

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টজাতীয়
ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘ই’ জাতীয় খাবার, যেমন—টকজাতীয় ফল, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, গাঢ় সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস। এগুলো মানসিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ও অ্যালঝেইমার ডিজিজের ফলে হওয়া অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে ভালো কাজ করে। 
ডার্ক চকোলেটে কোকো নামে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যা মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি ও শেখার সঙ্গে জড়িত নিউরন এবং রক্তনালি বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে। এগুলো মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহকেও উদ্দীপিত করে।

দানা শস্য
লাল চাল, লাল আটা বা এগুলো দিয়ে তৈরি সামগ্রী হলো দানা শস্য। মস্তিষ্কের কোষগুলোর দেহে অন্য কোষগুলোর চেয়ে বেশি শক্তি প্রয়োজন। গ্লুকোজ একমাত্র জ্বালানি, যা সরাসরি মস্তিষ্কে ব্যবহূত হয়। লো-জিআইসমৃদ্ধ খাবারগুলো রক্তে ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে দিনভর মানসিকভাবে সচেতন থাকতে সাহায্য করে, মানুষকে মনোযোগী করে তোলে।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড
চর্বিযুক্ত মাছ, আখরোট, ফ্লাক্সসিড, চিয়াসিড ইত্যাদি হলো ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের ভালো উৎস। প্রতিদিন চাহিদা মতো ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডজাতীয় খাবার মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। প্রকৃতিতে নানা তৈলাক্ত মাছে এগুলো রেডিমেড ডিএইচএ ও ইপিএ আকারে থাকে। এজাতীয় খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে এগুলোর ব্যবহার শুরু হয়ে যায়। ডিএইচএর মাত্রা কম থাকলে ডিমেনশিয়া হওয়া এবং স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ইপিএ ডিএইচএ স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট ও গুড মুড নামে খ্যাত সেরোটনিন  তৈরিতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ‘ই’জাতীয়
বিভিন্ন বাদাম এর উত্কৃষ্ট উৎস। এ ছাড়া সবুজ শাকসবজি, অলিভ অয়েল, ডিম, লাল চাল ইত্যাদি থেকে ভিটামিন ‘ই’ পাওয়া যায়। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘ই’ সেবনের ফলে বয়স্কদের স্মৃতিশক্তির অবক্ষয় কমাতে সাহায্য করে।
জামজাতীয়
গবেষণায় দেখা গেছে, স্বল্প সময়ে স্মৃতিভ্রম কমাতে এগুলো কার্যকর। এ ছাড়া গাঢ় লাল ও বেগুনি ফল এবং সবজিতে এসব ক্ষমতা আছে।

ডিম
বয়স্কদের ওপর চলমান একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১২ ও ফলিক এসিড সেবন করেন, তাঁদের তুলনামূলক কম স্মৃতিশক্তির অবক্ষয় ঘটে। এ ছাড়া ভিটামিন বি১,  বি৩ ও কোলিন মস্তিষ্কের প্রাত্যহিক কার্যক্রম চালাতে সাহায্য করে। মুরগির মাংস, মাছ, সবুজ শাকসবজি, বিভিন্ন বাদাম ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্সের ভালো উৎস।

সবুজ শাকসবজি
পালংশাকসহ বিভিন্ন সবুজ শাক ও ব্রকলির মতো পাতাযুক্ত শাকসবজিতে ভিটামিন ‘কে’, ফোলেট এবং বিটা ক্যারোটিনের মতো মস্তিষ্কের জন্য স্বাস্থ্যকর কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে। উদ্ভিদভিত্তিক এই খাবারগুলো স্মরণশক্তি হ্রাসের গতি ধীর করতে সহায়তা করতে পারে।

চা, কফি
চা ও কফিতে রয়েছে ক্যাফেইন। প্রত্যহ সামান্য কিছু  ক্যাফেইন গ্রহণে মানসিক ক্রিয়াকলাপের পরীক্ষায় ভালো ফল পাওয়া যায়। ক্যাফেইন নতুন স্মৃতি শক্তিশালী করতেও সহায়তা করতে পারে।

ভিটামিন ‘ডি’
ভিটামিন ‘ডি’ মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খুব কার্যকর। এর অভাবে মানসিক অবসাদ ও ডিপ্রেশনের মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে।
ডিমের কুসুম, সূর্যালোকে বেড়ে ওঠা মাশরুম, চর্বিযুক্ত মাছ, কলিজা ইত্যাদি ভিটামিন ‘ডি’-এর ভালো উৎস।
এ ছাড়া সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত শরীরে ২০-৩০ মিনিট সূর্যের আলো লাগালে তা দেহে ভিটামিন ‘ডি’ তৈরিতে সাহায্য করে।

মন ভালো রাখার কিছু উপায় পূর্ববর্তী

মন ভালো রাখার কিছু উপায়

কমেন্ট