‘সমন্বিত প্রচেষ্টায় ময়মনসিংহ অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবায় মৌলিক পরিবর্তন আনা সম্ভব’

‘সমন্বিত প্রচেষ্টায় ময়মনসিংহ অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবায় মৌলিক পরিবর্তন আনা সম্ভব’

বর্তমান সরকারের বড় একটি সাফল্য হলো, দেশের ১৪ হাজার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারের (সিএইচইসিপি) চাকরি সরকারিকরণ করা। এখন অনলাইনে বেতন নির্ধারণী ওয়েবসাইটের মাধ্যমে (Ibass ++) তাদের বেতন দেয়া হচ্ছে। অন্যান্য ভাতাদি বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে।

ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ পরিমাপ, সর্দি, জ্বর, কাশি, চুলকানির মতো রোগের যথাযথ চিকিৎসা প্রদান, মা ও শিশুর পরিচর্যা, বয়ষ্কদের চিকিৎসা প্রদান, ২২ ধরনের ওষুধ ফ্রি সরবরাহ করা এবং প্রয়োজনে উপজেলা হাসপাতালে রোগী রেফার করার ক্ষেত্রে সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। অচিরেই ময়মনসিংহ জেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো শতভাগ সচল হবে। 

৩০ আগস্ট (শনিবার) ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের শহীদ শাহাবুদ্দিন মিলনায়তনে কমিউনিটি ক্লিনিক সংক্রান্ত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় কমিউনিটি ক্লিনিকের ভূমিকা শীর্ষক এই আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহেদী। 

জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান। অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার তাহমিনা আক্তার, পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. প্রদীপ কুমার সাহা সহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাগণ, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তাগণ, জেলার অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, ময়মনসিংহ জেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ-সহ গণমান্য ব্যক্তিবর্গ।

সেমিনারে জানানো হয়, ময়মনসিংহ জেলায় প্রস্তাবিত ৫৮০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ৫৪২টির কার্যক্রম চলমান। এতে ৫২৮ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার কর্মরত। ১৭টি শুন্য পদ রয়েছে। এসব কমিউনিটি ক্লিনিক হতে সাধারণ অসুস্থতার প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি স্বাস্থ্য শিক্ষা  ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা, গর্ভবতী নারীদের সেবা, প্রসূতি পরবর্তী সেবা, শিশুদের টিকাদান, রক্তচাপ মাপা, ডায়াবেটিস রোগীদের আরবিএস টেস্ট, রোগীর তথ্য সংগ্রহ ও রিপোর্ট তৈরি করা, জরুরী স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, ওষুধ সরবরাহ, রোগীদের রেফার করা প্রভৃতি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। সেবা গ্রহীতাগণ কমিউনিটি ক্লিনিক হতে বর্তমানে ২২ প্রকারের ওষুধ প্রদান করা হয়।

সেমিনারের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহেদী বলেন, সমন্বিত প্রচেষ্টায় ময়মনসিংহ সহ সারা দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় একটি মৌলিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। সে সুযোগ আমাদের রয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে প্রতিটি কাজে স্থানীয় সরকার সংশ্লিষ্ট যেকোনো সহায়তা থাকবে। শুধু তাই নয়, দেশের প্রতিটি বিভাগের জন্যও সেই সহায়তা বজায় থাকবে।

তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, বিদেশি সংস্থার সহায়তায় সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে ময়মনসিংহেও প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ভিন্ন আঙ্গিকে ট্রেনিং সেন্টার গড়ে তোলা যায়। সেখানে তারা ফান্ডামেন্টাল কোর্স ও রিফ্রেশার ট্রেনিং করতে পারবে। কমিউনিটি ক্লিনিকের সাথে মূল সড়কের সংযোগ স্থাপনে গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামোতে স্থানীয় সরকারের সহযোগিতা সর্বাত্মক থাকবে।

কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, গত ৫৪ বছরে স্বাস্থ্য খাতে বড় সংস্কার হয়েছে ওয়ার্ড লেভেলে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করে প্রান্তিক স্বাস্থ্য সেবায় নিয়ে যাওয়া। আরো একটি বড় সংস্কার হলো, অধিদপ্তরের ন্যায় ট্রাস্ট গঠন করা। ইতিমধ্যে ৭০টি দেশে এই কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা সমাদৃত হয়েছে। জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব বান কি মুন এদেশে একবার এসেছিলেন প্রান্তিক এই স্বাস্থ্য কাঠামো সশরীরে দেখতে।

সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই তাদের মতামত ব্যক্ত করে বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো একেবারেই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করছে। ক্লিনিকগুলোতে বিদ্যুৎ, পানি, সংযোগ রাস্তা ইত্যাদির যথাযথ সুবিধা দেয়ার ব্যাপারে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারগণ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

 

 

ইএফটির মাধ্যমে বেতন পাবেন সিএইচসিপিরা
পরবর্তী

ইএফটির মাধ্যমে বেতন পাবেন সিএইচসিপিরা

কমেন্ট