‌‌‘ব্লাড ক্যান্সারের উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা এখন দেশেই’

‌‌‘ব্লাড ক্যান্সারের উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা এখন দেশেই’

বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা ও সচেতনতার অভাবে অনেকেই প্রাণ হারান। অথচ ব্লাড ক্যান্সারের উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা এখন দেশেই রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে ব্লাড ক্যানসারে বেঁচে থাকার হার ৭০-৮০ শতাংশ। তবে  এ রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি। এজন্য রোগী এবং তার পরিবারকে সচেতন হয়ে রোগটি দেখা দিলে দ্রুত হেমাটোলজিস্টের শরণাপন্ন হতে হবে। 

আজ বিশ্ব ব্লাড ক্যান্সার দিবস ২০২৫ উপলক্ষে হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ এবং জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগ যৌথভাবে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

সকাল সাড়ে ৮টায় বর্ণাঢ্য র‍্যালির মাধ্যমে দিনের কর্মসূচির শুরু হয়। র‍্যালির উদ্বোধন করেন দেশের খ্যাতনামা হেমাটোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মো. জলিলুর রহমান এবং খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান। র‍্যালি পরিচালনা করেন হেমাটোলজি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আদনান হাসান মাসুদ। র‍্যালি শেষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বক্তারা ব্লাড ক্যান্সার সম্পর্কে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

হেমাটোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. আমীন লুৎফুল কবীর বলেন, ব্লাড ক্যান্সার এখন আর অনিরাময়যোগ্য নয়। দ্রুত রোগ শনাক্তকরণ ও সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলেই জীবন রক্ষা করা সম্ভব।

সোসাইটির বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশে হেমাটোলজি চিকিৎসা ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এখন প্রয়োজন সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় এবং রোগীর পাশে পরিবার ও সমাজের সমর্থন।

হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান ডা. একেএম মইনুল ইসলাম বলেন, অনেকেই প্রাথমিক লক্ষণগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে দেরিতে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। সচেতনতা বাড়ালেই রোগটি শুরুতেই ধরা সম্ভব। 

শিশু হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান ডা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, শিশুদের মধ্যে রক্ত ক্যান্সার নির্ণয় এবং চিকিৎসায় অভিভাবকদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি, কারণ শিশুরা দ্রুত সাড়া দেয়।

এরপর সকাল সাড়ে নয়টায় ইনস্টিটিউটের সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামে একটি বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ হেমাটোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মো. জলিলুর রহমান।

বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. রাকিব উদ্দিন আহমেদ এবং আটটি বিভাগীয় সদরে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক ডা. মো. তৌফিক হাসান ফিরোজ।

সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আদনান হাসান মাসুদের স্বাগত বক্তব্যের পর চারজন বিশিষ্ট হেমাটোলজিস্ট তাঁদের গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। সেমিনারে বিশেষজ্ঞ প্যানেলে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক কর্নেল (অবঃ) ডা. আব্দুল হাই, ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ এবং অধ্যাপক ডা. তাশমিম ফারহানা দীপ্তা। 

দিনব্যাপী এই আয়োজনে ব্লাড ক্যান্সার বিষয়ে গবেষণা, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়, যা ভবিষ্যতে এ রোগ প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আয়োজকগণ।

 

ব্লাড ক্যান্সার ও রক্তরোগ বিষয়ক চিকিৎসা দেবে ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল পরবর্তী

ব্লাড ক্যান্সার ও রক্তরোগ বিষয়ক চিকিৎসা দেবে ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল

কমেন্ট